মোবাইল গেম-এ আসক্ত মোংলার তরুণ প্রজন্ম, শংকিত অভিভাবকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার ২৪শে মে ২০২১ ০২:১৭ অপরাহ্ন
মোবাইল গেম-এ আসক্ত মোংলার তরুণ প্রজন্ম, শংকিত অভিভাবকরা

সৈকত মামুন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। বয়স ১০ বছর।তার মামা সাব্বির হাসান (২৫) যখন মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের গেম খেলে তখন পাশে বসে সে সবকিছুই দেখে।তার মামাকে দেখে একটা সময় সে নিজেই গেম খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ে।এক পর্যায়ে শিশুটি নিজেই তার বাবার ফোন ব্যবহার করে অ্যাপসের মাধ্যমে গেম ডাউনলোড করে।লেখাপড়া বাদ দিয়ে সারাদিন সে মোবাইলে গেম খেলা নিয়েই ব্যস্ত।



শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ এখন মোবাইল ফোনে আসক্ত।বিশেষ করে পাবজি-ফ্রি ফায়ার গেমে আসক্ত বেশিরভাগই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী।করোনাভাইরাসে স্কুল-কলেজ ও কোচিং প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ।শিক্ষার্থী বা তরুণরা বাড়িতে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী না হলেও মোবাইলে ঠিকই আসক্ত তারা।




মোংলা পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর, মেরিন ড্রাইভ সড়ক, সরকারি কলেজ মোড়, কাইনমারী ব্রিজের উপর ও বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখা গেছে পাবজি-ফ্রি ফায়ার, ফেসবুক, ইন্টারনেট, ম্যাসেঞ্জারে এখন ব্যস্ত সময় কাটে তরুণ প্রজন্মের।তবে গত বছরে করোনার শুরুতে অনেক শিক্ষার্থীকে অনলাইনে ক্লাস করতে দেখা গেলেও এখন আর তেমন একটা দেখা যায়না।



মোংলা সরকারি কলেজের ছাত্র কামরুল হাসানের পিতা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, তার সন্তান এখন আর আগের মত পড়াশোনায় মনোযোগী নয়।বকাবকি করি তারপরও ছেলে কথা শোনেনা।করোনায় কলেজ বন্ধ হওয়ায় মোবাইল ফোনের প্রতি যেমন তার আসক্তি বেড়েছে তেমন বিভিন্ন জায়গায় আড্ডা দিয়ে সে অনেক বেপরোয়া হয়ে গেছে।তাকে নিয়ে পরিবারের সবাই শঙ্কিত।



মোংলার ছবেদ খান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন আহমেদ কাঞ্চন বলেন,

ইন্টারনেট বা গেম খেলা কোনো নিষিদ্ধ বিষয় নয়।কিন্তু এর ক্ষতিকর,অযৌক্তিক ও অপরিমিত ব্যবহার চিন্তা আর আচরণের ওপর প্রভাব ফেলে।



তিনি আরো বলেন, এই ইন্টারনেটের ব্যবহার বা গেম খেলার বিষয়টি যখন তার চিন্তা আর আচরণের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে,সামাজিক দক্ষতা কমিয়ে দেয়,বা দৈনন্দিন জীবনযাপনের মান খারাপ করে দেয়,তখন তা আসক্তির পর্যায়ে চলে যায়।



শেখ আব্দুল হাই ব্লাড ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহার করলেই সেটাকে নেতিবাচকভাবে নেয়া যাবে না।দেখতে হবে সেটি আসক্তির পর্যায়ে চলে গেছে কি না।অনেক বেশি সময় ধরে মোবাইলে গেম খেললে বা ইন্টারনেট ব্যবহার করলে চারপাশের অনেক কিছুতেই  মনোযোগ আসেনা।



এ সমস্যা এখন তরুণ প্রজন্মের মধ্যেই বেশি দেখা যায়।তিনি আরো বলেন,ভিডিও গেম,প্লে-স্টেশন,স্মার্টফোন বা ট্যাবের স্ক্রিনে শিক্ষার্থী বা তরুণদের ডুবে থাকার পুরো দায় অভিভাবকের।বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের এখনই সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।