মেঘনার ভাঙনের কবলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১৬ গ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
সাখাওয়াত জামিল সৈকত (অতিথি লেখক)
প্রকাশিত: সোমবার ২৪শে মে ২০২১ ০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন
মেঘনার ভাঙনের কবলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১৬ গ্রাম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১৬টি নদী তীরবর্তী গ্রাম মেঘনার ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে। ভাঙনের কবলে পড়ে বদলে যাচ্ছে সে উপজেলার মানচিত্র। এলাকার অধিকাংশ মানুষ ঘরবাড়ি, ফসলি জমিজমা, ব্যবসায়িক দোকানপাট হারিয়ে অনেকটাই সর্বস্বান্ত।


নবীনগর উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রমত্তা মেঘনার প্রবল ভাঙনের খেলা চলছে প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে। ভৈরব-নবীনগর-নরসিংদী নদীপথের প্রায় ৮০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গত ৫ বছরে মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়েছে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা। প্রতিবছর শতশত কৃষিজমি, বাড়িঘর গ্রাস করছে সর্বনাশী মেঘনা। বাড়ছে উদ্বাস্তু ও ছিন্নমূলের সংখ্যা। মেঘনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে যাযাবর জীবনযাপন করছে অসংখ্য পরিবার।


সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের ধরাভাঙ্গা, নুরজাহানপুর, মুক্তারামপুর, সোনাবালুয়া, বড়িকান্দি, মানিকগর বাজার, নয়াহাটি, চিত্রি, চরলাপাং, নজরদৌলত, গাছতলা, কেদারখলা, দুর্গারমপুরসহ এলাকার হাজার হাজার একর ফসলি জমিসহ অসংখ্য ঘরবাড়ি ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অব্যাহত এ ভাঙনের ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নবীনগর উপজেলার আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাজারসহ কয়েকটি গ্রাম মেঘনাগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে বড়িকান্দি, ধরাভাঙ্গা, নুরজাহানপুর, মুক্তারামপুর, সোনাবালুয়া, মানিকনগর বাজার, চরলাপাং, কেদারখোলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।


প্রতি বর্ষা মৌসুমে এ ভাঙনের ভয়াবহতা চরম আকার ধারণ করে। তখন নদীর প্রচণ্ড ঢেউ আর মাটি ভাঙার কারণে ছোটাছুটি করে মেঘনা পাড়ের মানুষ। নিরুপায় হয়ে সৃষ্টিকর্তার মুখপানে চেয়ে থাকা ছাড়া আর তাদের কিছুই করার থাকে না।


পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী ভাঙনরোধকল্পে ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে বড়িকান্দি নূরজাহানপুর, সোনাবালুয়া ও ধরাভাঙ্গা গ্রামের নদী ভাঙন এলাকায় কাজ চলছে ধীরগতিতে। পানির নিচে সাগর চুরির মতো ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।


নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল বলেন, নদীর পাড়ের মানুষের সবচেয়ে বড় দুঃখ হলো নদী ভাঙন, মেঘনার ভাঙন রোধকল্পে ২০২০ সালে ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ঠিকাদার কাজ শুরু করেছেন, কিন্তু কাজের ধীরগতির কারণে অসংখ্য বাড়িঘর ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।