কালীগঞ্জে ৫ মাদক মামলার আসামী পৌরসভার কাউন্সিলর হলেন!

নিজস্ব প্রতিবেদক
আতিকুর রহমান, জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২রা মার্চ ২০২১ ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন
কালীগঞ্জে ৫ মাদক মামলার আসামী পৌরসভার কাউন্সিলর হলেন!

একটি নয়, দুটি নয় আদালতে বিচারাধীন পাঁচ পাঁচটি মাদক মামলার আসামী রুবেল হোসেন কাউন্সির নির্বাচিত হয়েছেন। রোববার (২৮ ফেব্রয়ারি) অনুষ্ঠিত কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে রুবেল ২নং সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি ১০৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি দিনবন্ধু পেয়েছেন ৬৪০ ভোট।


কালীগঞ্জ পৌর এলাকার খয়েরতলা গ্রামের মন্টু বিশ্বাসের ছেলে রুবেল জনপ্রতিনিধি নির্বাচতি হওয়ার খবরে চক্ষু চড়ক গাছে উঠেছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের। এটি খারাপ নজীর হয়ে থাকবে বলে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা মন্তব্য করেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, দেশব্যাপী মাদক বিরোধী অভিযান শুরু হলে ক্রসফায়ারের ভয়ে দুই বছর ভারতে পালিয়ে ছিলেন রুবেল।


সেখানে তিনি বনগায়ে বসবাস করতেন। ২০১৯ সালের ৫ মে তারিখে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে রুবেল (৩১) ও তার চাচাতো ভাই সজল (২৩) কালীগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। কালীগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি ইউনুচ আলী জানিয়েছিলেন, রুবেল শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী।


সে দীর্ঘদিন ধরে ফেন্সিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রির সাথে জড়িত ছিল। তিনি তার চাচাতো ভাই সজলকে সাথে নিয়ে মাদকের বিরাট সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। র‌্যাব ও পুলিশের ভাষ্যমতে বিভিন্ন সময়ে তার বাড়িতে পুলিশ, র‌্যাব ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর একাধিকবার অভিযান চালিয়ে অনেক মাদকদ্রব্য উদ্ধারও করে।


মাদক দ্রব্য উদ্ধারের পর তার বিরুদ্ধে একে একে ৫টি মামলা দায়ের করা হয়। এখন বিচারাধীন আছে ৫টি মাদক মামলা। রুবেল হোসেন তার হলফনামায়ও ৫টি মাদক মামলা থাকার কথা স্বীকার করেছেন। ঝিনাইদহ র‌্যাবের তৎকালীন মেজর মনির আটক করার পর তিনি পালিয়ে যান বলেও কথিত আছে। রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত উল্লেখযোগ্য মামলার মধ্যে রয়েছে,


২০১৭ সালের ৫ জুন কালীগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলা নং ০৬, একই থানায় ২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টম্বর দায়েরকৃত মামলা নং ২২, ২০০৯ সালের ২৭ এপ্রিল কালীগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলা নং ১৯, ২০১২ সালের ১৩ নভেম্বর কালীগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলা নং ১৪ ও ২০১০ সালের ২৩ জানুয়ারী কালীগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলা নং ২০।


এ বিষয়ে কথা হলে নবনির্বাচিত কাউন্সিলর রুবেল হোসেন প্রথমে মামলাগুলো ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করলেও পরে জানান, ২০১৯ সালের ৫ মে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করার পর সব কিছু ছেড়ে দিয়ে তাবলীগ করেন। দ্বিনের দাওয়াত দেওয়ার কারণে মানুষ তাকে পচ্ছন্দ করে ভোট দিয়েছেন। তিনি এখন স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন বলেও দাবী করেন।


এদিকে একাধিক মাদক মামলার আসামী কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলার নির্বাচন অফিসার আলমগীর হোসেন জানান, আদালত থেকে সাজাপ্রাপ্ত হলে তার মনোনয়ন বাতিল হতো। যেহেতু তার মামলাগুলো বিচারাধীর রয়েছে, সেহেতু তার কাউন্সিলর হতে বাধা ছিল না।