আমার স্বাধীন দেশ নিয়ে ভারতের সংসদে আলোচনা কেন ? - পীর সাহেব চরমোনাই

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৯শে নভেম্বর ২০২৪ ০৪:১৯ অপরাহ্ন
আমার স্বাধীন দেশ নিয়ে ভারতের সংসদে আলোচনা কেন  ? - পীর সাহেব চরমোনাই

ভারতের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং হিন্দুদের বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিষয়কে কেন্দ্র করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) শ্রীমঙ্গলের ঐতিহাসিক চরমোনাই মাহফিল ময়দানে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত ছাত্র গণজমায়েতের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। 


এ সময় পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, “আমাদের দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ভারতের পার্লামেন্টে আমাদের দেশের বিষয়ে আলোচনা কেন হবে? আমরা কি স্বাধীন দেশের নাগরিক নই?” তিনি বলেন, “হিন্দুরা এই দেশে তাদের ভালোমন্দ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে, তবে এ নিয়ে বিদেশে আলোচনা হবে কেন?” 


চরমোনাই পীর আরও বলেন, “দেশের এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সকল দলকে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এবং যে কোন উগ্রবাদী কার্যক্রম ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে আওয়াজ তুলতে হবে।” বিশেষভাবে তিনি ভারতীয় উগ্রবাদী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। “ইসলাম, দেশ ও মানবতার পক্ষে আওয়াজ তুললে বাতিলরা পালাতে বাধ্য হবে,”—এমন মন্তব্য করেন তিনি। 


পীর সাহেব চরমোনাই ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সদস্যদের সাহাবাদের আদর্শ অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “রুহানিয়াত ও জেহাদের সমন্বিত প্রয়াস ছাড়া বিজয় সম্ভব নয়। বিজয় অর্জন করতে হলে অবশ্যই সাহাবাদের পথ অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যে নীতি ও আদর্শ নিয়ে রাসূল (সা.) কে পাঠিয়েছেন, সেই আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।” তিনি শিক্ষিত ও আদর্শবান প্রজন্ম গড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং ইসলামী ছাত্র আন্দোলনকে একটি আদর্শ ভিত্তিক নেতৃত্ব তৈরি করতে আহ্বান জানান। 


গণজমায়েতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট বরকত উল্লাহ লতিফ, ও বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। 


এদিকে, শ্রীমঙ্গলের চরমোনাই ময়দানে অনুষ্ঠিত বিশাল জুমার জামাতে অংশ নেন বরিশাল বিভাগের শিক্ষাবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, উলামায়ে কিরাম, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও হাজার হাজার মুসল্লি। জামাতে ইমামতি করেন নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই হাফিজাহুল্লাহ।  


মাহফিলের প্রথম দিনেই দুটি বার্ধক্যজনিত মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। তবে মাহফিল কর্তৃপক্ষ জানায়, নিহতদের মরদেহ তাদের পরিবারকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে হস্তান্তর করা হয়েছে। আগামী ৩০ নভেম্বর, শনিবার পীর সাহেব চরমোনাই’র আখেরি বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী এই মাহফিলের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।