পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় শহীদ ছাত্র-জনতার স্মরণে আয়োজিত একটি সভায় আওয়ামী লীগ নেতার উপস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা উঠেছে। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের স্মরণে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক সভার আয়োজন করা হয়। তবে ওই সভায় রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বড়বাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসাইন উপস্থিত থাকায় আলোচনার ঝড় উঠেছে।
অনুষ্ঠানের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফেসবুকে রাঙ্গাবালীর শিক্ষার্থীরা একে শহীদদের প্রতি অবমাননা হিসেবে দেখছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী ইমরোজ মাহমুদ রুদ্র তার ফেসবুকে লিখেছেন, "আজকের স্মরণসভায় যেই আওয়ামী লীগ নেতা উপস্থিত, সেই দলের হাতে শহীদ হয়েছিলেন হাজারো ছাত্র। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে শহীদদের স্মরণ করা কি শহীদের প্রতি তামাশা নয়?" তিনি আরও বলেন, “এটা দুঃখজনক যে, স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন সেই দলের প্রতিনিধিরা, যারা ছাত্র আন্দোলনে রক্ত ঝরিয়েছিল।”
এছাড়া সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী বাহাউদ্দীন হাসান বিপ্লবও ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, “যাদের কারণে আমার ভাইয়েরা শহীদ হয়েছেন, তাদের পাশে বসিয়ে শহীদদের স্মরণ করা ইতিহাসের প্রতি বেঈমানি।” তার মতে, শহীদদের রক্তের মূল্য মেনে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা উচিত ছিল না।
এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান বলেন, "আমরা আওয়ামী লীগের কাউকে দাওয়াত দেইনি। ওই ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে আমরা অবহিত ছিলাম না। যদি জানতাম, তাহলে আমরা এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে পারতাম।" তিনি দাবি করেন, উপস্থিত ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে অনুষ্ঠানে কেউ তাদের অবহিত করেনি, এবং তিনি অনাকাঙ্ক্ষিত এই পরিস্থিতির জন্য দুঃখিত।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বিতর্কের ফলে রাঙ্গাবালী অঞ্চলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। শিক্ষার্থীরা এবং আন্দোলনকারীরা একইসঙ্গে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাচ্ছেন, কেন তাদের এ ধরনের ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। তাদের মতে, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে তাদের আত্মত্যাগের ইতিহাসের প্রতি সম্মান দেখানো জরুরি ছিল।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।