বিস্ময়কর কৃতিত্ব, মাত্র ৪৯ দিনে পুরো কোরআন হিফজ !

নিজস্ব প্রতিবেদক
গিয়াস উদ্দিন রনি- জেলা প্রতিনিধি , নোয়াখালী
প্রকাশিত: শনিবার ২৩শে নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৪১ অপরাহ্ন
বিস্ময়কর কৃতিত্ব, মাত্র ৪৯ দিনে পুরো কোরআন হিফজ !

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার সুরেরগো পোলে অবস্থিত বাইতুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান (৮) মাত্র ৪৯ দিনে পুরো কোরআন মুখস্থ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। শিশু বয়সে এমন বিরল কৃতিত্ব অর্জন করা প্রায় অস্বাভাবিক, তবে হাবিবের অসাধারণ মেধা এবং আল্লাহর সাহায্যে এটি সম্ভব হয়েছে।



২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় হাবিব বাইতুল কুরআন মাদ্রাসায় নাজেরা বিভাগে ভর্তি হয় এবং ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ১৯ তারিখ থেকে কোরআন হেফজ শুরু করে। মাত্র ৪৯ দিনে ৩০ পারা কোরআন পুরোপুরি মুখস্থ করে সে, যা সত্যিই বিস্ময়কর। বিশেষ করে, শিশু হাবিবের পক্ষে পাঁচ থেকে দশ পৃষ্ঠা একদিনে মুখস্থ করা সাধারণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।


হাবিবুরের এই অর্জনে মুগ্ধ দেশের জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি হাবিবুরের কৃতিত্ব জানার পর নিজেই তাকে সাক্ষাৎ করার আমন্ত্রণ জানান। ২৩ নভেম্বর, শনিবার, শায়খ আহমাদুল্লাহ সপরিবারে হাবিবুরের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তার স্বপ্ন পূরণ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, "হাবিবের কৃতিত্বটি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ছাড়া সম্ভব নয়। কুরআন এক মহাসমুদ্র, এবং মাত্র ৪৯ দিনে এই সমুদ্রকে বক্ষে ধারণ করা একটি মু’জিযা।"


হাবিবুরের শিক্ষক হাফেজ মো. নুরুল আলম জানান, "হাবিব অত্যন্ত নম্র এবং পরিশ্রমী। সবাই যখন খেলাধুলা করত, সে তার সময় কাটাতো পড়াশোনায়। তার কঠোর পরিশ্রমই তাকে এই বিরল কৃতিত্ব এনে দিয়েছে।"হাবিবুরের মা সাজেদা আক্তার বলেন, "আমার স্বামী প্রবাসে থাকেন। এই ছেলে দুনিয়াতে আসার আগে থেকেই তাকে নিয়ে অনেক কষ্ট করেছি। আল্লাহ তায়ালা আমার স্বপ্ন পূর্ণ করেছেন, এজন্য আমি কৃতজ্ঞ।"


হাবিবুরের এই অর্জন শুধু তার পরিবার, শিক্ষকদের এবং সহপাঠীদের জন্য গর্বের বিষয় নয়, বরং পুরো সমাজের জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস। তার গল্প প্রমাণ করে, যদি ইচ্ছা এবং কঠোর পরিশ্রম থাকে, তবে বয়স কখনোই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।

এছাড়া, হাবিবের এক ভাইও মাত্র এক বছর বয়সে হাফেজ হয়েছেন, যা তার পরিবারের জন্য আরো এক গর্বের বিষয়। হাবিবুরের স্বপ্ন বড় আলেম হওয়া, যাতে তিনি তার বাবা-মায়ের জানাজা পড়াতে পারেন। তার এই নিরলস ইচ্ছা এবং অধ্যবসায় আল্লাহ তায়ালার কাছে গ্রহণযোগ্য হোক, এই দোয়া করেছেন তার শিক্ষক এবং পরিবারের সদস্যরা।


অত্যন্ত মেধাবী এই শিশুটি ভবিষ্যতে দ্বীনের খেদমতে নিজেকে নিবেদিত করবে, এই আশাতেই তার শিক্ষক ও পরিবার সবাই দোয়া করছেন।