তেলের কৃত্রিম সংকট বরদাশত নয়: ভোক্তা অধিদপ্তরের হুঁশিয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌরভ নূর , বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৭শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:১৫ অপরাহ্ন
তেলের কৃত্রিম সংকট বরদাশত নয়: ভোক্তা অধিদপ্তরের হুঁশিয়ারি

ভোজ্যতেল নিয়ে কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান। তিনি বলেছেন, যারা বাজারে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, রমজান উপলক্ষে ভোগ্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভোজ্যতেলের সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করছে, যা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। এ বিষয়ে তদন্ত করতে বন্দর থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত একটি কমিটি গঠন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে তিনটি ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হয়েছে। তারা লিখিত জবাব জমা দিয়েছে, যা পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজারে তেলের ঘাটতি না থাকলেও কিছু ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃতভাবে মজুদ করে সংকট তৈরি করছে।

এদিকে, ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে কাওরানবাজারে ভোজ্যতেলের বাজার তদারকি করা হয়। এ সময় দেখা যায়, কিছু দোকানে তেল মজুদ থাকলেও তা প্রদর্শন করা হয়নি, বরং ক্রেতাদের তেল নেই বলে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। গোপন স্থানে মজুদ থাকা বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেলের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে।

অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু ব্যবসায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ তেল বিক্রির চেষ্টা করছে। ২০২৩ সালে উৎপাদিত এবং মেয়াদোত্তীর্ণ সয়াবিন তেলের ছয়টি কার্টন জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া, কিছু ব্যবসায়ী নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে তেল বিক্রি করছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।

তদারকিতে আরও দেখা গেছে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে উৎপাদিত ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের এমআরপি ৮১৮ টাকা নির্ধারিত থাকলেও কিছু ব্যবসায়ী তা ৮৫০ থেকে ৮৫২ টাকায় বিক্রি করছে। এছাড়া, কিছু ব্যবসায়ী মজুদ রেখে গোপনে বেশি দামে বিক্রির চেষ্টা করছে।

অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাজারে প্রকৃতপক্ষে তেলের সংকট নেই, বরং কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মুনাফার আশায় সংকট সৃষ্টি করছে। এই ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং নিয়মিত বাজার তদারকি অব্যাহত থাকবে।

সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন। যারা বাজার ব্যবস্থাকে অস্থির করতে চায়, তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।