সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় এক মর্মান্তিক মানব পাচারের ঘটনা ঘটে, যেখানে হাসিবা খাতুন নামের এক তরুণীকে ভারতে পাচার করা হয়েছে। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও হাসিবা উদ্ধার হয়নি এবং অভিযুক্তরা গ্রেফতার হতে পারেনি। তার পরিবার এখনো অন্ধকারে, দারিদ্র্যের মধ্যে কাঁদছে, আর ছোট্ট মেয়ে মা'কে ফিরে পাওয়ার আশায় কাঁদছে।
হাসিবার পিতা রবিউল ইসলাম গাজী ও মা শাহানারা বেগম জানিয়েছেন, তাদের মেয়েকে প্রথমে দ্বিতীয় বিয়ে করার পর স্বামী মঞ্জুরুল মোল্যার দ্বারা শিকার হতে হয়েছে। হাসিবা, যার একটি ছোট মেয়ে রয়েছে, প্রথম স্বামীর সাথে বিচ্ছেদের পর দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু সুখের আশায় বিয়ে করা হাসিবা, কিছুদিন পরেই দ্বিতীয় স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাপের বাড়িতে ফিরে আসেন। একপর্যায়ে ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করতে যান, সেখানে মঞ্জুরুল তাকে আবার মায়ায় ভুলিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
তবে, মঞ্জুরুল তার ষড়যন্ত্র থামায়নি। তিনি একের পর এক টাকা দাবি করেন, একবার ২ লাখ টাকা যৌতুক চাওয়া হয়। টাকা না পেয়ে ৬ জুলাই হাসিবাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে, ভারতে পাচার করে পতিতালয়ে বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ করেন হাসিবার মা-বাবা। এরপর থেকে হাসিবার সাথে কোন যোগাযোগ নেই।
ঘটনা জানার পর, হাসিবার পিতা-মাতা স্থানীয় থানায় মামলা করতে গেলে, পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে। শেষ পর্যন্ত তারা মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন এবং আদালতের নির্দেশে ২২ সেপ্টেম্বর আশাশুনি থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়। কিন্তু এখনও হাসিবার উদ্ধার এবং পাচারের সাথে জড়িত আসামিদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত চালাচ্ছেন এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামিদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছেন। তবে এখনও কোনও উল্লেখযোগ্য সাফল্য মেলেনি। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাজীব মন্ডল জানান, আসামির মোবাইল বন্ধ রয়েছে এবং গা ঢাকা দিয়েছে, তবে তারা চেষ্টা করছেন আসামিদের অবস্থান উদঘাটনের।
হাসিবার পিতা-মাতা এখন দুঃখের সাগরে ডুবছেন, তাদের চোখের পানি আর ছোট্ট মেয়েটির মায়ের জন্য করা কান্না অব্যাহত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।