ভারতের জেএন রায় হাসপাতাল বাংলাদেশিদের চিকিৎসা সেবা না দেবার ঘোষণা দিয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌম্যা সাহা , কলকাতা প্রতিনিধি ভারত
প্রকাশিত: শনিবার ৩০শে নভেম্বর ২০২৪ ১২:৫১ অপরাহ্ন
ভারতের জেএন রায় হাসপাতাল বাংলাদেশিদের চিকিৎসা সেবা না দেবার ঘোষণা দিয়েছে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর কলকাতার মানিকতলা এলাকার জেএন রায় হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা সেবা অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতি 'অত্যাচারের' প্রতিবাদে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 


শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাসপাতালের কর্মকর্তা শুভ্রাংশু ভক্ত বলেন, "আমরা একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি যে, আজ থেকে আমরা আর কোনো বাংলাদেশি রোগীকে ভর্তি করবো না। এটি ভারতের জাতীয় পতাকার অপমানের প্রতিবাদে নেয়া সিদ্ধান্ত।" তিনি আরও জানান, তিনি আশা করছেন, কলকাতার অন্যান্য হাসপাতালগুলোও একই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ রাখবে।


হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতে, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলাদেশ যেভাবে ভারতের সঙ্গে একাত্মতা দেখিয়েছিল, তার পরেও বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি তাদের জন্য উদ্বেগের। শুভ্রাংশু ভক্তের ভাষ্য, "আমরা লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব প্রকাশিত হচ্ছে, বিশেষ করে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি অবমাননা করা হচ্ছে। ভারতীয় পতাকা অবমাননা সহ্য করা সম্ভব নয়, তাই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"


এদিকে, গত বৃহস্পতিবার ভারতের প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ড. ইন্দ্রনীল সাহা একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করে জানিয়ে দেন, "বুয়েটের প্রবেশপথে ভারতীয় পতাকা বিছিয়ে রাখা হয়েছে।" এ ঘটনায় তিনি লিখেন, "চেম্বারে বাংলাদেশের রোগী দেখা আপাতত বন্ধ রাখছি। আগে দেশ, পরে রোজগার। আশা করি, অন্য চিকিৎসকরাও এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।"


এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সম্প্রতি বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার প্রতি অবমাননার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আসছে। রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সামাজিক মতবিরোধের মধ্যে, ভারতীয় চিকিৎসকদের এই পদক্ষেপ দুটি সম্পর্কের অবনতির আরও একটি বড় সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। 


বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে diplomatic সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কা তৈরি হওয়ায়, এই সিদ্ধান্ত আরো জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।