সন্ত্রাস দমন ও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দেশজুড়ে চলছে বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় এ অভিযানে নতুন করে ৭৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে অভিযানের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট গ্রেপ্তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩১৩ জনে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শুধু অপারেশন ডেভিল হান্ট নয়, বিভিন্ন মামলার ভিত্তিতেও গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সময়ে উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু অস্ত্র, যার মধ্যে রয়েছে একটি শুটার গান, একটি কার্তুজ ও দুটি চাকু।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অপারেশন ডেভিল হান্ট মূলত সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনতে পরিচালিত হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক ঘোষিত এই অভিযানের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশবিরোধী চক্রের তৎপরতা রোধ করা এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এই বিশেষ অভিযান শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। তার আগে ৭ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার শিকার হন ১৫ থেকে ১৬ শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে এই অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
অভিযানের ধারাবাহিকতায় এখন পর্যন্ত হাজার হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, এ অভিযান দেশব্যাপী সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এই অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে।
অভিযানের ফলে বিভিন্ন অপরাধী চক্র আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে বলছেন, নিরীহ মানুষও গ্রেপ্তারের শিকার হচ্ছে, যা নিয়ে প্রশাসনের আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা চলছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, কেবল অপরাধীদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। এই অভিযান কতদিন চলবে, তা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।