যথাযোগ্য মর্যদায় রাবিতে মহান শিক্ষক দিবস পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:৫৭ অপরাহ্ন
যথাযোগ্য মর্যদায় রাবিতে মহান শিক্ষক দিবস পালিত

যথাযোগ্য মর্যাদায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শহীদ ড. জোহা দিবস ও শিক্ষক দিবস পালিত হয়েছে। ঊনসত্তুরের গণঅভ্যূত্থানকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা প্রক্টরের দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তানী সেনাদের গুলিতে নিহত হন। তিনিই এদেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী। দিনটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

দিবসটি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার দিবসের কর্মসূচিতে ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৭টায় উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও চৌধুরী মো. জাকারিয়াসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ শহীদ ড. জোহার সমাধি ও জোহা স্মৃতিফলকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করেন। সেখান অন্যদের মধ্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রভাষ কুমার কর্মকার, প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অনুষদ অধিকর্তা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। 
এরপর রসায়ন বিভাগ ও শহীদ শামসুজ্জোহা হলসহ অন্যান্য আবাসিক হল, বিভাগ, পেশাজীবী সমিতি ও ইউনিয়ন প্রভাতফেরিসহ শহীদ জোহার সমাধি ও স্মৃতিফলকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে। এদিন সকাল ১০টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয় জোহা স্মারক বক্তৃতা। এতে ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক বক্তৃতা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার অধ্যাপক এম সাইদুর রহমান খান। 

দিবসের কর্মসূচিতে আরো ছিলো অফিসার সমিতি কার্যালয়ে আলাচনা সভা, বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআনখানি ও বিশেষ মোনাজাত, শহীদ শামসুজ্জোহা হলে দোয়া মাহফিল, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। এ দিন শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা রাখা হয়। বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করে।

এছাড়াও দিবসটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে শিক্ষক দিবসের স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গণসাক্ষর কর্মসূচি করেছে প্রথম আলো বন্ধুসভা, সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশন। সবার দাবি দিবসটিকে যেনো রাষ্ট্রীয়ভাবে শিক্ষক দিবস ঘোষণা এবং পালন করা হয়।
ড. সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহা ১৯৩৪ সালের ১ মে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এর কিছুদিনের মধ্যেই তিনি লন্ডনে একটি স্কলারশিপ পান। ১৯৬৪ সালে তিনি লন্ডন থেকে ফিরে এসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে যোগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্ব পালনকালে ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি  আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হন তিনি।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব