নেতাকর্মীদের ইটপাটকেলেই আহত হন রিজভী: পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: রবিবার ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:০১ অপরাহ্ন
নেতাকর্মীদের ইটপাটকেলেই আহত হন রিজভী: পুলিশ

রাজধানীর মিরপুরে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মিছিলে নিজেদের ইট-পাটকেলে আহত হন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ আরও অনেকে। বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে ককটেল বিস্ফোরণ করে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় পল্লবী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশের উপ-পরিদর্শক রবিউল আওয়াল বাদী হয়ে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে রিজভীসহ ৬৯ জনের নামে মামলা করেন। মামলার এজহারে এসব উল্লেখ্য রয়েছে।

তবে বিএনপির দাবি, পুলিশি অ্যাকশনে গুরুতর আহত হয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক, ছাত্রদরের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাউসার এবং ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম তুহিনসহ বেশ কয়েকজন।

পল্লবী থানার পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, মিরপুরে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মিছিলে নিজেদের ইট-পাটকেলে আহত হন রুহুল কবির রিজভীসহ আরও অনেকে। এ সময় পুলিশের দুই সদস্যও আহত হন। এ ঘটনায় রিজভীসহ ৬৯ জনের নামে পেনাল কোড ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞানামানা আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর হাকিম কনক বড়ুয়া পুলিশের এজহার গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে ৩১ মার্চ দিন ধার্য করেছেন। আদালতের পল্লবী থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজহারে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ১১টা ১০ মিনিটের দিকে রিজভীসহ ৬৯ বিএনপির নেতাকর্মী এবং অজ্ঞাতনামা আরও অনেকে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিল করতে করতে পল্লবীর সেকশন-৬, ব্লক-সি, এভিনিউ-৫ ঢাকা ডেসকোর সামনে ১০০ গজ পূর্বে পাকা রাস্তায় নিজেদের মধ্যে হট্টগোল ও মারামারি করতে থাকে। এক পর্যায়ে একে অপরকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে এবং রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করার চেষ্টা করে।

এ সময় পল্লবী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রবিউল আওয়াল সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আন্দোলনরত বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের রাস্তা বন্ধ করতে নিষেধ করা মাত্রই তাদের বেআইনি জনতা আমাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং হত্যার উদ্দেশ্যে তিন চারটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ককটেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এলাকায় ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে পালিয়ে যায়। ফলে চলাচলরত পথচারীরা আতঙ্কিত হয়ে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। তখন আমি বিষয়টি বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তাৎক্ষণিক পল্লবী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত), পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন), এসআই রাজিব কুমার সরকার, আবুল কালাম আজাদ সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ওই সময় আমার সঙ্গীও এএস আই কামাল হোসেন এর বাম হাতে বাহু ও বাম পায়ের রানের ওপর যখম প্রাপ্ত হয় এবং কনস্টেবল ফয়জুর রহমানের ডান হাতের কব্জির ওপর ও ডান পায়ের হাঁটুর ওপর যখম প্রাপ্ত হয়। আসামিরা একত্রিত হয়ে পুলিশের কাজে বাধা প্রদানসহ অতর্কিতভাবে হামলা চালায় হত্যার উদ্দেশ্যে সাধারণ ও গুরুতর জখম করিয়া পেনাল কোডের ১৪৩/৩০৭/৩৩২/৩৩৩/৩৫৩ ধারা অপরাধ করেছে এবং উক্ত আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ও বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্য ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আইনের ৪/৫/৬ ধারায় অপরাধ করেছে।

মামলার উল্লেখ্য আসামিরা হলেন-বিএনপি সিনিয়ার যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসির আলী, ছাত্রদলের সিনিয়ার সহ-সভাপতি রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রূপনগর থানার সভাপতি কাওসার হামিদ ও ছাত্রদলের ঢাকা কলেজ সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম তুহিন।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব