করোনা নিয়ে ভয়ের কারণ নেই: ভারতের প্রখ্যাত চিকিৎসক নাগেশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ৩রা এপ্রিল ২০২০ ১০:১৯ পূর্বাহ্ন
করোনা নিয়ে ভয়ের কারণ নেই: ভারতের প্রখ্যাত চিকিৎসক নাগেশ্বর

করোনা ভাইরাসে ভয়ের তেমন কারণ নেই বলে মনে করেন ভারতের প্রখ্যাত চিকিৎসক জি পি নাগেশ্বর রেড্ডি। ভারতের দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছেন, এই ভাইরাসকে জয় করা সম্ভব। তার এ বক্তব্য ভারতসহ বিভিন্ন দেশে হইচই ফেলে দিয়েছে।

রেড্ডি হায়দরাবাদে অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো গ্যাস্ট্রোএনটারোলজি হাসপাতাল এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব গ্যাস্ট্রোএনটারোলজির (এআইজি) চেয়ারম্যান। চিকিৎসায় অসামান্য অবদান রাখায় তাকে ২০১৬ সালে পদ্মভূষণ পদক দেয় ভারত সরকার। তিনি ২০০২ সালে পদ্মশ্রী পুরস্কারেও ভূষিত হন।

সাক্ষাত্কালে তিনি বলেন, আমাদের এটা মনে করার কোনো কারণ নেই যে ইতালি ও ফ্রান্সে যা হয়েছে, এখানেও তা হবে। দ্বিতীয় কথা হলো, এই ভাইরাস ১০ বছরের কম বয়সীদের আক্রান্ত করে না। দুই-একটা ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। তবে এর সংখ্যা খুব বেশি নয়।

আর বয়স্কদের জৈবিক বয়সের চেয়ে শারীরিক বয়সটি বেশি তাৎপর্য বহন করে। সাধারণভাবে যাদের বয়স সত্তরের বেশি এবং যাদের ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন বা ক্যানসার আছে, তাদের এই ভাইরাস মারাত্মকভাবে ঘায়েল করতে পারে। কিন্তু এমন শারীরিক সমস্যা না থাকলে ৬০-৬৫ বছর বয়সীদেরও ভয়ের কারণ নেই। শারীরিকভাবে সামর্থ্যবান যে কারো জন্য এই ভাইরাস বড়ো কোনো সমস্যা তৈরি করবে না। তিনি বলেছেন, ভারতের লকডাউন আর বাড়ানোর দরকার নেই।

রেড্ডি বলেন, করোনা ভাইরাস আরএনএ ভাইরাস। এই ভাইরাস যখন ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র বা ভারতে ছড়িয়েছে, তখন এর জিনগত কিছু বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয়েছে। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র, পরে ইতালি, এরপর চীন এবং চতুর্থত ভারতে এর জিনগত বৈশিষ্ট্য উন্মোচন করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ইতালিতে ছড়ানো ভাইরাসের সঙ্গে ভারতে ছড়ানো ভাইরাসের ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

ভারতের ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিনে কিছু কিছু জিনগত পরিবর্তন হয়েছে। স্পাইক প্রোটিনের মাধ্যমেই ভাইরাসটি মানবশরীরের কোষে সংযুক্ত হয়। ভারতের ক্ষেত্রে কম যুক্ত হয়েছে, যার অর্থ, এটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এটা ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে।

ইতালিতে বেশি মারা যাওয়ার কারণের বিষয়ে তিনি বলেন, ইতালিতে এ ভাইরাসের আরএনএতে তিনটি নিউক্লিওটাইড পরিবর্তন হয়েছে। আর এর ফলে এটি মানুষের জন্য আরো মারাত্মক হয়ে পড়েছে। ইতালিতে অন্য কিছু বিষয়ও কাজ করেছে। সেখানে মারা যাওয়া বেশির ভাগ মানুষের বয়স ৭০ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে। এক্ষেত্রে ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস ভূমিকা রেখেছে। এর পাশাপাশি সেখানে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপেরও আধিক্য আছে।