কর্জশোধ রিজিক বৃদ্ধি ও বৈষয়িক উন্নতি!

নিজস্ব প্রতিবেদক
হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী- বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ
প্রকাশিত: সোমবার ১০ই আগস্ট ২০২০ ০৭:৩৫ পূর্বাহ্ন
কর্জশোধ রিজিক বৃদ্ধি ও বৈষয়িক উন্নতি!

পবিত্র কোরআন মজিদের ছুরা আলে - ইমরানের ২৩-২৭ নাম্বার আয়াতসমূহ ফজর ও মাগরিবের নামাজ শেষে সাতবার পাঠ করিলে ইনশাআল্লাহ কর্জ শোধ ও শত্রু পরাভূত হইবে। প্রত্যহ এশার নামাজের পর শয়নকালে এই আয়াত বহুবার পাঠ করিলে আল্লাহ তায়ালা উপার্জন বৃদ্ধি, সৌভাগ্যশালী এবং দরিদ্রতা বিনষ্ট করেন।

ছহি কিতাবে এই ছুরা অবতীর্ণ হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলা হইয়াছে যে, হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পদশালী ছিলেননা বলিয়া ইহুদী ও নাছারাগণ তাঁহার নবুয়তের দাবী অগ্রাহ্য করিত ও বিদ্রুপ করিয়া বলিত যে, হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও নবী নহেন। যদি তাহাই হইত, তবে হযরত দাউদ (আঃ) ও হযরত ছোলায়মান (আঃ) - এর মত তিনিও ঐশ্বর্যশালী হইতেন, তাঁহারাও তো নবী ছিলেন। কিন্তূ কেহই গরীব ছিলেননা, এবং পরাক্রান্ত নর পতি হিসাবে মশহুর ছিলেন। বিধর্মীগণের এই উক্তির পরেই এই আয়াতসমূহ অবতীর্ণ হয়। ইহার অব্যবহিত পর হইতেই মুসলমানদের বৈষয়িক উন্নতি, পারস্য ও রোম সাম্রাজ্য হস্তগত হইয়া দিগ্বিজয়ের সূচনা হয়। এই আয়াতের মূল হইতেছে ধন সম্পদ, বিও- বিভব একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছায়ই লাভ করা যাইতে পারে। মানুষের দৃষ্টির পরিধি অতি ক্ষুদ্র। ইহা দ্বারা আল্লাহর ক্ষমতা ও কুদরতকে সম্যক প্রত্যক্ষ করা  চলে না। এই আয়াত পাঠের দ্বারা আল্লাহর অসীম কুদরত ও শক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করা হয়, যে ব্যক্তি এই প্রকার নিজিকে নিঃশেষে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করে, তাহার প্রতি আল্লাহর অপার করুণা বর্ষিত হইবেই হইবে। হাদীছে বর্ণিত আছে,  একদা হযরত মায়াজ (রঃ) ঋণগ্রস্ত হইয়া পড়েন এবং কোনক্রমেই তাহা পরিশোধ করিতে পারেন না। অতঃপর অনন্যোপায় হইয়া হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম - এর শরণাপন্ন হইলেন। হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহাকে এই আয়াত পাঠ করিতে হুকুম দেন এবং আয়াতের ফজিলতে অচিরেই মায়াজ (রঃ) ঋণমুক্ত হইলেন।

বাংলা উচ্চারণঃ কুলিল্লাহুম্মা মালিকাল মুলকি তুতিল মুলকা মান তাশাউু ওয়া তানজিউুল মুলকা মিমমান তাশাউু ওয়া তুইজ্জু মান তাশাউু ওয়া তুজ্জিল্লু মান তাশাউু বিয়াদিকাল খাইর। ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির। তুলিজুল্লাইলা ফিন্নাহারি ওয়াতুলিজুন্নাহারা ফিল্লাইলি ওয়া তুখরিজুল হাইয়্যা মিনাল মাইয়্যিতি ওয়া তুখরিজুল মাইয়্যিতা মিনাল হাইয়্যি, ওয়া তারজুকু মান তাশাউু বিগাইরি হিছাব।

অর্থঃ ১,( হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বল, হে আল্লাহ! তুমি সমগ্র রাজ্যের প্রভু। তুমি যাহাকে চাও রাজ্য দান কর, আর যাহার হাত হইতে চাও রাজত্ব ছিনাইয়া নাও ও যাহাকে চাও মর্যাদা প্রদান কর এবং যাহাকে চাও হতমান কর, তোমার হস্তেই সকল কল্যাণ। আর নিঃসন্দেহে তুমি সর্ববিষয়োপরি সর্বশক্তিমান। ২, তুমি রজনীকে দিবসে পরিণত কর ও দিবসকে রজনীতে পরিণত কর। মৃত ( নিষ্প্রাণ)  হইতে জীবিতকে বহির্গত কর এবং জীবিত হইতে মৃতকে বহির্গত কর ( জীবিতকে মৃত্যু দান কর)। আর যাহাকে চাও সংখ্যাহীন রিজিক দিয়া থাক।
 
ইয়া আল্লাহ আমাদের সবাইকে আমল করার তৌফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন। 


লেখকঃ বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও গবেষক হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব।