আগামীকাল জুমা পড়বো না যোহর? দারুল উলূম দেওবন্দের দিকনির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ১০ই এপ্রিল ২০২০ ০১:২২ পূর্বাহ্ন
আগামীকাল জুমা পড়বো না যোহর? দারুল উলূম দেওবন্দের দিকনির্দেশনা

 দারুল উলূম দেওবন্দের সম্মানিত মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানী (হাফিজাহুল্লাহ) দারুল উলূম দেওবন্দের ফতোয়া বিভাগে একটি প্রশ্ন পেশ করেন। দারুল উলূম দেওবন্দের সম্মানিত মুফতিগণ তার সমাধান প্রদান করেন। নিম্নে কেবল সমাধানপত্রের নির্বাচিতাংশের অনুবাদ প্রদান করা হলো। 

 শহর ও শহরতলী এবং বড় গ্রাম (যেখানে জুমার শর্ত পাওয়া যায় এবং জুমা ফরজ হয়) সেখানকার মসজিদগুলোতে যেমনি পূর্ব থেকে জুমার নামায অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে তেমনি বর্তমান অবস্থায়ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্ধারিত সংখ্যাক লোকজন মিলে জুমার নামায আদায় করবে, অবশ্যই জামাতে ইমাম ব্যতীত তিনজন পুরুষ মুকতাদি হওয়া জরুরি। 

 যদি কোন শহর বা অঞ্চলের কিছু মসজিদে পূর্ব থেকে জুমার ব্যবস্থা আছে, আর কিছু মসজিদে জুমার ব্যবস্থা নেই, তাহলে বর্তমান সময়ে সেখানেও (প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে পরিস্থিতি পরির্বতন না হওয়া পর্যন্ত) চার-পাঁচ জন মিলে জুমার নামায আদায় করবে। যেন কিছু মানুষ সেখানে জুমা আদায় করার সুযোগ পায়। 

জ্ঞাতব্য বিষয় হলো, বর্তমান সময়ে মসজিদে চার-পাঁচজনের অধিক মানুষ একত্রিত হতে নিষেধ করা হয়েছে; এটি সরকারী নিয়ম পালনার্থে করা হয়েছে। সুতরাং এমন নিষেধ ‘সর্ব সাধারণের অনুমতি থাকা’  (যা জুমার নামায ছহীহ হওয়ার জন্য শর্ত) এর  বিপরীত নয়। কেননা, এখানে মানুষকে জুমা থেকে বিরত রাখা উদ্দেশ্য নয় বরং নিয়ম ভঙ্গ করলে বড় বিপদে পতিত হওয়ার আশঙ্কা আছে, তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই এই বাধা-নিষেধ। 
اما اذا كان لمنع عدو يخشى دخوله وهو في الصلاة فالظاهروجوب الغلق اه. حلبي (حاشية الطحطاوي على الدر، 1: 344)
قوله: "لم تنعقد" يحمل على ما إذامنع الناس لاماإذاكان لمنع عدو أولقديم عادة، وقدمر (المصدرالسابق)
(আরো দলিল মূল ফতোয়া থেকে দেখে নিন....)

 পাড়া-মহল্লার যে সকল লোক মসজিদে জুমার নামায আদায়  করতে পারবে না, তারা নিজেদের বাড়ির সামনে বৈঠকখানা কিংবা ঘরের বাহিরের বারান্দায় অন্য লোকদের অংশগ্রহণের অনুমতি সাপেক্ষে জুমার নামায আদায় করতে পারবে। (তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের বাধা-নিষেধ না থাকতে হবে) অন্যান্য লোকদের অংশগ্রহণের অনুমতির অর্থ আশ-পাশের মানুষদেরকে অবগত করবে যে, এখানে জুমার জন্য কেউ আসতে চাইলে আসতে পারবে। 

 যদি জনস্বার্থে সরকারের পক্ষ থেকে পাঁচ জনের অধিক ব্যক্তির সমাগম নিষিদ্ধ করা হয়, (যেমন বাংলাদেশে জুমার জন্য ১০ জনের অধিক মানুষ একত্রিত হওয়াকে নিষেধ করা হয়েছে) তাহলে তারাও কয়েকজন মিলে জুমার নামায আদায় করবে। তবে ইমাম ব্যতীত নুন্যতম তিনজন বালেগ পুরুষ মুকতাদি হতে হবে। তাদেরকে নিয়ে ইমাম সাহেব সংক্ষিপ্ত খুতবা ও সংক্ষিপ্ত কেরাতের মাধ্যমে জুমার নামায আদায় করবে। 

 যে সকলস্থানে কয়েকজন মিলেও জুমার নামাযের ব্যবস্থা করা না যায়, সেখানে তারা একাকি যোহরের নামায আদায় করবে। তাতে তাদেরকে অপারগ মনে করা হবে। জুমা ছেড়ে দেয়ার কারণে গুনাহগার হবে না। 

 যে সকল ছোট গ্রামে পূর্ব থেকেই জুমা ফরজ নয়, সেখানে মানুষ একাকি কিংবা কয়েকজন মিলে জামাত সহকারে  যোহরের নামায আদায় করবে। 

দলিল সহ বিস্তারিত ফতোয়ার কপি থেকে পড়ুন…..

ফতোয়াটি অনুবাদ ও সম্পাদনা করছেন  মাওলানা সলিমুদ্দিন মাহদি কাসেমী, শিক্ষক জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া মাদ্রাসা।