চলতি বছরের শুরুতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সৌন্দর্যবর্ধন ও আলোকসজ্জার উদ্যোগ নেওয়া হয়।এজন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় সাড়ে ১৯ লাখ টাকা।তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলেও নিয়মিত তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রকল্পটি বিলীন হতে চলেছে।শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রকল্পটির শুরুতেই পরিকল্পনার ঘাটতি ছিল।বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে প্রায় ২০০ গার্ডেন লাইট লাগানো হলেও এর বেশিরভাগ বাল্বই চুরি হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে বেশকিছু লাইটের শেড।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সমাবর্তনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের মূল গেট থেকে প্রশাসনিক ভবন হয়ে বিভিন্ন অনুষদের রাস্তা এবং গোল চত্বর থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত পুরো রাস্তায় ২০০ গার্ডেন লাইট বসানো হয়।ভেতরে দেওয়া হয়েছে সাদা বাল্ব। মুক্তমঞ্চ থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত প্রায় সব লাইট গুলোই চুরি হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরিকল্পিতভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা নতুন নয়। হলগুলোর কাজেও প্রশাসনের তদারকির অভাবে শেষ হচ্ছে না। এমন লাইটিং পার্কে হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে আশা করা যায় না।এমন অপরিকল্পিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা অপরাধ। এই অপরিকল্পিত প্রকল্পে বাস্তবায়নে যারা ছিলেন তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
আলোকসজ্জা নিয়ে অভিযোগ করেন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান মাহমুদ জীবন বলেন, এ প্রকল্পটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লক্ষ করেছি।কিন্তু সংশ্লিষ্ট যারা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছেন, তারা তাদের কাজের প্রতি উদাসীনতা ছিলেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় পার্কের মতো এমন লাইটিং, এটা খুবই দৃষ্টিকটু।একইসঙ্গে নিম্নমানের পণ্য ব্যবহারের কারনে এক মাসের মধ্যেই অধিকাংশ লাইট নষ্ট হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) জাকির হোসেন বলেন, সাড়ে ১৯ লাখ টাকার প্রকল্পে শুধু গার্ডেন লাইট ছিল বিষয়টি এমন নয়। এখানে ছিলো লাইটের শেড, বৈদ্যুতিক খুঁটি, আগের পুরাতন পোল পরিবর্তন এবং নতুন করে বিদ্যুতের লাইন নেওয়াসহ নানা ধরনের কাজ ছিল।কাজ বাস্তবায়নের পর করোনার সময়ে লাইট চুরি হয়ে গেছে। শেড কয়েকটা ভেঙে গেছে।এজন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠিও দিয়েছি।
এই অপরিকল্পিত প্রকল্পের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের সহকারী পরিচালক ড. শাহাবুদ্দিন বলেন, প্রত্যেক প্রকল্পের জন্য ডিজাইন কনসাল্ট্যান্ট রয়েছে।তাদের কোথায় কী করতে হবে, তা ইঞ্জিনিয়ার দপ্তরই ঠিক করে। আমরা শুধু মাত্র প্রকল্পটি অনুমোদনের বিষয়টি দেখেছি।
এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনায় কিছু ত্রুটি ছিল।যে কারণে সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়নি। আর লাইট চুরির বিষয়টা ভেতরে কিংবা বাইরের কেউ করছে।রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি তা করোনার কারণে সম্ভব হয়ে উঠেনি। তবুও আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সেগুলো সংস্কার করে দিতে বলবো।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।