সাইকেলের চাকা ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্র আবিষ্কার কুবি শিক্ষার্থীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
কৌশিক আহমেদ, কুবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সোমবার ২০শে জুলাই ২০২০ ০৪:৪৭ অপরাহ্ন
সাইকেলের চাকা ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্র আবিষ্কার কুবি শিক্ষার্থীর

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রানা মজুমদার গতির উপর নির্ভর করে চলে দুই চাকার বাইসাইকেল। বাইসাইকেলের চাকা ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলে দাবি করেছে। এ ছাড়া উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে চলবে বৈদ্যুতিক লাইট, ফ্যান, টিভি এমনটাই দাবি এই শিক্ষার্থীর। শুধু তাই নয় কম সময়ে আর অল্প খরচে সাইকেলের চাকা ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। সাইকেলের চাকার গতিশক্তির মাধ্যমে চুম্বকক্ষেত্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এতে ঘরে বসে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।

বিশ্বব্যাপী করোনার আতংকের মধ্যেও থেমে থাকেনি এই শিক্ষার্থী। করোনাকালীন সময়ে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মাঝে মাত্র এক সপ্তাহে বাইসাইকেল থেকে মটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্রটি আবিষ্কার করেন তিনি। যদিও বিশ্বে এর আগে ভারতীয় বংশোদ্ভুত মার্কিন ধনকুবের মানোঝ ভরগ্যাভা প্যাডেল ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব এমন একটি অভিনব বাইসাইকেল আবিষ্কার করেন। এছাড়াও আরো অনেকে সাইকেলের প্যাডেল ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্র আবিষ্কৃত করলেও এই যন্ত্রটি তুলনামূলক ভিন্ন বলে মনে করেন কুবির এই তরুণ।

এ বিষয়ে রানা মজুমদার বলেন, আমাদের দেশের উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে দেশের যে চাহিদা আছে তা মিটানো যায় না, সে ক্ষেত্রে আমার এটি হেল্পফুল হবে, বেশি লোডশেডিং হলে সাইকেল চালিয়ে বৈদ্যুতিক চাহিদা মেটানো যাবে। এছাড়া যেসব এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছাতে পারেনি সেখানে এই সাইকেল জেনারেটর ব্যবহার করা যাবে। অবশ্যই আগেও সাইকেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যন্ত্র  আবিষ্কার হয়েছে। তবে সেসব থেকে  আমারটা ভিন্ন। কম খরচে অধিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। যেখানে শতভাগ আউটপুট পাওয়া যাবে। আবিষ্কৃত সাইকেল জেনারেটর থেকে লাইট, ফ্যান, টিভি, পানি উত্তোলনের পাম্প মেশিন চালানো সম্ভব। তবে এটার সাপোর্ট নির্ভর করবে ব্যাটারির শক্তির উপর।

তিনি বলেন, আমরা যদি বেশি ভোল্টের ব্যাটারি ব্যবহার করি তাহলে বেশি সময় ধরে সাপোর্ট দিবে। তবে এই জেনারেটর থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করতে পারবে গ্রামীন অঞ্চল ও যেসকল অঞ্চলে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই সেখানকার জনগণ। মূলত গ্রামীণ মানুষের আর্থিক কথা চিন্তা করে ও স্বল্প খরচে সাইকেল কেনার সামর্থ্য থাকায় গ্রামীণ মানুষ যাতে এই জেনারেটর ব্যবহার করতে পারে সে কথা মাথায় রেখে যন্ত্রটি তৈরি করেছেন বলে জানান রানা।

তবে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আপাতত বড় পরিসরে তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। যদি বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে জাতীয় পর্যায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন এই ক্ষুদে বিজ্ঞানী।রানা মজুমদার কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার সাওড়াতলীর সেলিম মজুমদারের পুত্র। তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।