মসজিদের ভেতরে নারীদের ইয়োগা অনুশীলন!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:৩৮ অপরাহ্ন
মসজিদের ভেতরে নারীদের ইয়োগা অনুশীলন!

প্রথমবারের মতো ভারতের হায়দ্রাবাদের একটি মসজিদের ভেতরে ইয়োগা অনুশীলন করা হয়েছে। তাদবুন শহরের নবাব সাহেব কুন্তা এলাকায় অবস্থিত মসজিদ-ই-ইশাক নামের মসজিদের অসংক্রামক ও স্থুলতাবিরোধী ইয়োগার অনুশীলন করা হয়। মসজিদ পরিচালনা কমিটির অনুমতিতে তিনতলা মসজিদের একটি তলাতে এই ইয়োগা ক্লাস আয়োজন করা হয়। মূলত মসজিদের ওই তলাতে সাস্থ্যসেবা ও কাউন্সেলিং কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবেই ইয়োগার অনুশীলন করা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এখবর জানিয়েছে।
মসজিদটির স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিচালক মুজতবা হাসান আসকারি বলেন, বাইরে অনুশীলন ও সরু গলিতে হাঁটার মতো যথেষ্ট জায়গা নেই। তাই মসজিদের আমাদের কাউন্সেলররা শুধু ইয়োগা আসন দেখিয়ে দেন তা নয়, তারা অনেক রোগীকে মোবাইল ফোনে দেখার জন্য ইউটিউব লিংক দেন। যাতে করে তাদের সময় নষ্ট হয় কম।
মসজিদটির ক্লিনিকে আসা নারীদের বেশিরভাগই অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ওজন বেশি হওয়াজনিত হৃদরোগ। প্রত্যেক ছুটির দিন রোগীদের মসজিদে ইয়োগা শেখানো হয়। স্বাস্থ্য কাউন্সেলররা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা মেনে চলেন। লোকজনদের সুস্থ রাখতে তারা ইয়োগাকে স্বাস্থ্যসেবার অংশে পরিণত করেছেন।
মসজিদে আসা রোগীদের ওপর পরিচালিত স্বাস্থ্য জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে এই সেবা চালু করা হয়েছে। জরিপ অনুসারে, ৬০০ মানুষের মধ্যে ৭০ শতাংশ স্থূলতায় ভুগছেন। এটি সারাতে ক্লিনিক পরিচালনাকারীরা অনেকগুলো বিকল্প চিন্তা-ভাবনা করে শেষ পর্যন্ত ইয়োগাকে নির্বাচন করেন। কারণ শহরের ভৌগলিক অবস্থা ও পরিস্থিতির কারণে বাইরে অনুশীলনের সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে।
হ্যাল্পিং হ্যান্ড ফাউন্ডেশন (এইচএইচএফ) নামের এনজিও’র ম্যানেজিং ট্রাস্টিও হলেন মুজতবা হাসান আসকারি। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এনজিও সিড’র সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এইচএইচএফ মসজিদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিচালনা করছে। এখানে এক নারী চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন দুজন পথ্য বিশেষজ্ঞ ও দুজন কাউন্সেলর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি ফরম পূরণ করার পর রোগীকে ইয়োগা অনুশীলন করতে বলা হয়। এখানে ওষুধ সেবনের চেয়ে খাবার নিয়ন্ত্রণ ও শারীরিক অনুশীলনে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

পথ্য বিশেষজ্ঞ ফারহাত ফাতিমা প্রতিদিন মসজিদে আসা অনেক রোগী দেখেন। তিনি জানান, ইয়োগা করতে বলা হয় কারণ এতে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়া এটি ঘরের ভেতরও অনুশীলন করা যায়। এই বিশেষজ্ঞ বলেন, যা তাদের পক্ষে সম্ভব সে অনুযায়ী আমি তাদের পরামর্শ দেই। তাদের যদি বলি প্রতিদিন হাঁটতে হবে, সরু গলির কারণে তারা তা করতে পারবে না।

একমাস পূর্বে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিবন্ধিত হয়েছেন আয়েশা সুলতানা। তিনি ডায়বেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগী। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানান, ইয়োগা অনুশীলনের পর থেকে তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, খাবার ও শারীরিক অনুশীলন যে কারও স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে, তা সম্পর্কে আমি জানতাম না। এখন ওষুধের প্রতি আমার নির্ভরতা অনেক কমে গেছে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব