২০২৫ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে পেট্রোবাংলার উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৯শে নভেম্বর ২০২৪ ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
২০২৫ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে পেট্রোবাংলার উদ্যোগ

বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে পেট্রোবাংলা। বর্তমানে এই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার জন্য প্রস্তুতি চলছে এবং দরপত্র আহ্বানের কাজ আগামী ২০২৫ সালের মার্চে শুরু হতে পারে। পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, অনুসন্ধান কার্যক্রমের জন্য প্রাথমিক খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে এবং এখনই কনসালটেন্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করা হচ্ছে, ফেব্রুয়ারি নাগাদ খসড়া চূড়ান্ত হয়ে যাবে।


পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন, "পার্বত্য অঞ্চলে প্রচুর তেল-গ্যাস থাকার সম্ভাবনা থাকলেও এখন পর্যন্ত সেখানে তেমন অনুসন্ধান কার্যক্রম হয়নি। আমরা আশা করছি, এই অঞ্চলে ব্যাপক গ্যাসের মজুত রয়েছে।" তবে, তিনি সতর্ক করে বলেছেন, সঠিক তথ্যের অভাবে এখানে তেল-গ্যাস উত্তোলন চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। বিশেষত, পথ নির্মাণ এবং পাইপলাইনের নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পেতে পারে। এই কারণেই দরপত্র প্রস্তুত করার সময় পূর্ববর্তী মূল্যমানের তুলনায় কিছুটা বাড়তি দামে প্রস্তুত করা হচ্ছে।


এছাড়া, বাংলাদেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম নিয়ে নতুন নিয়ম প্রবর্তন করা হয়েছে। বর্তমানে, বাপেক্স, সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি বা অন্য কোনো কোম্পানির সঙ্গে ব্লক চুক্তি করার সুযোগ নেই। শুধুমাত্র পেট্রোবাংলা এই ধরনের চুক্তি করতে পারবে। তবে, পেট্রোবাংলা একটি নতুন ফর্মুলা তৈরি করেছে যার মাধ্যমে বাপেক্স বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করতে পারবে। এতে বাপেক্স কোনও অর্থনৈতিক বিনিয়োগ করবে না, তবে জমি সরবরাহ করবে এবং ভবিষ্যতে উত্তোলিত গ্যাসের একটি নির্দিষ্ট শেয়ার পাবে।


বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধান প্রায় এক শতাব্দী পুরানো। ১৯১৪ সালে প্রথম কূপ খনন করা হয় সীতাকুণ্ডে, এবং ১৯২২ সালে পাথারিয়ায় আরও একটি কূপ খনন করা হয়। ১৯৯৮ সালে হালদা অঞ্চলে সর্বশেষ কূপ খননের পরও বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য গ্যাস পাওয়া যায়নি। তবে, গত কয়েক দশকে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এই অঞ্চলে সম্ভাবনা নিরূপণ করেছে এবং ইউএসজিএস ও পেট্রোবাংলা একসাথে ২০০১ সালে পরিচালিত একটি সমীক্ষায় সম্ভাব্য গ্যাসের মজুতের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি বলে জানা যায়।


বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পার্বত্য অঞ্চলে গ্যাস মজুতের সম্ভাবনা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, যার ফলে বাংলাদেশের শক্তি খাতের জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। তবে, তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম সফল করতে যে সব ধরনের অবকাঠামো এবং বিনিয়োগ প্রয়োজন, তা এখনও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।