কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার ১৫ বছর ৮ মাস ২৭ দিন পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে পুনর্বহাল হয়েছেন। তিনি ২০০৯ সালে মাত্র ৩২৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হন। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এবং দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানার স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তিনি তার পদে ফিরে আসেন।
অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার ২০০২ সালের ৬ আগস্ট কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৭ সালে রাজনৈতিক প্রভাবে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তিনি ৩২৬ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ অভিযোগের পর তিনি দীর্ঘদিন আইনি লড়াই করেন এবং সর্বশেষ ৩০ এপ্রিল ২০২৪ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তার পক্ষে ন্যায়সঙ্গত সিদ্ধান্ত আসে।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় কলেজ ক্যাম্পাসে অধ্যক্ষকে বরণ করতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী একটি বর্ণাঢ্য র্যালীর আয়োজন করে। ব্যান্ড পার্টি বাজিয়ে এবং পটকা ফাটিয়ে আনন্দ উদযাপন করা হয়। দুপুর ১২টায় কলেজ মিলনায়তনে একটি সংবর্ধনাসভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিভিন্ন বক্তা তার দীর্ঘ ও কঠিন আইনি সংগ্রামের প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ আলী সভাপতিত্ব করেন, এবং অন্যান্য বক্তারা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের অসারতা তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েই তিনি এই দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।
অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার অভিযোগ করেন, তাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির উদ্দেশ্যে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে ৩২৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই, এবং এমন অভিযোগ একজন অধ্যক্ষের জন্য অসম্ভব। তিনি বলেন, "আমার ড্রয়ারে ৫০০ টাকা পর্যন্ত রাখা নিয়ম ছিল, কিন্তু আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল।"
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, "আদালত অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারকে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিয়েছে।" তিনি জানান, অধ্যক্ষের যোগদান নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এভাবে, দীর্ঘ ১৬ বছর পর অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার তার হারানো পদে ফিরে আসার মাধ্যমে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছেন, যা কলেজের সকলের জন্য একটি আশার আলো বয়ে আনবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।