রাজধানী ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতের দেওয়া নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করে নতুন নীতিমালা তৈরি করার জন্য সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগঠন ‘সংগ্রাম পরিষদ’। তারা এই সময়ের মধ্যে নীতিমালার বিষয়ে সুরাহা না হলে, আগামী ৩০ নভেম্বর ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে দেশের ৬৪ জেলায় সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন বলেন, তাদের সংগঠন গত ১২ বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে যাতে ব্যাটারিচালিত রিকশার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করা হয়। তিনি আরও বলেন, "আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি, যাতে রিকশাচালকদের লাইসেন্স, রুট পারমিট দেওয়া হয় এবং সড়কে পৃথক লেন বরাদ্দ করা হয়। বিআরটিএ আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক বলে মনে করেছে, কিন্তু একটি প্যাডেলচালিত রিকশাচালক সংগঠন হঠাৎ করে রিট দায়ের করেছে।"
তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, "একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের লাইসেন্স দিন, নিবন্ধন করুন এবং রুট পারমিট প্রদান করুন। যেহেতু সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে এ ধরনের ব্যবস্থা প্রয়োজন।"
এছাড়া, খালেকুজ্জামান লিপন আরও উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে আপিল বিভাগ মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের আদেশ দেয়, তবে শহরের অভ্যন্তরে এই যানগুলো চলাচল চালু থাকে। কিন্তু সম্প্রতি ঢাকা মহানগরী এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলে, রিকশাচালকরা বিক্ষোভে নেমে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেন।
তিনি বলেন, “দেশব্যাপী প্রায় ৬০ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশার সঙ্গে ৩ কোটি মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল। তাই আমাদের আন্দোলন আরও তীব্র হবে। আমরা ধৈর্য ধরে আন্দোলন চালাচ্ছি, কিন্তু সরকারের উচিত আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে দ্রুত সমাধান করতে।”
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের মে মাসে সাবেক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে, ঢাকার সাবেক দুই মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলামও শহরে এসব যানবাহন চলাচলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে ‘জীবিকা’র বিষয়টি বিবেচনায় এনে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল ঢাকায় পুনরায় চালু রাখার ঘোষণা দেন।
এ পরিস্থিতিতে, রিকশাচালকরা সরকারের কাছে একটি কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।