শীতের শুরুতে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে বেড়েছে পর্যটকদের ভিড়। সারাবছরই সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে আগ্রহী ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অন্যতম গন্তব্যস্থল হলেও, শীতের সময়ে এর আকর্ষণ যেন আরও দ্বিগুণ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে দীর্ঘ ছুটির সময়গুলোতে সিলেটের দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পায়। এবারে ছুটির সময় সিলেটের পর্যটন খাতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
বর্তমানে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে হাজারো পর্যটককে ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে সিলেট জেলা সহ আশপাশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ায় পরিবারসহ সিলেটের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আসছেন। এর ফলে সিলেটের পর্যটন অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সাপ্তাহিক ও স্কুল কলেজের ছুটির সময় সিলেটে ৫ থেকে ৬ লাখ পর্যটক আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে সাদাপাথর, জাফলং, রাতারগুল, বিছনাকান্দি, লালাখাল, পান্থুমাই, মায়াবী ঝরনা সহ অন্যান্য স্থানগুলো এখন পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত। এসব জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, ঝর্ণা, চা বাগান এবং পাহাড়ি দৃশ্য দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করছে। বিশেষ করে টিলা ও পাহাড়ের ওপর থেকে লালাখাল নদীর নীল জলরাশি এবং বিছনাকান্দির অপরূপ দৃশ্য পর্যটকদের মনোরঞ্জন করছে।
এবারের শীতকালীন ছুটিতে সিলেটের হোটেলগুলোতেও ভিড় দেখা গেছে। অধিকাংশ হোটেল ও গেস্ট হাউসের রুম বুকিং হয়ে গেছে। সিলেটের পর্যটন খাতে দীর্ঘ সময়ের স্থবিরতা কাটিয়ে আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠছে। ২০২০ সালের করোনা মহামারি এবং ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার পর সিলেটের পর্যটন খাত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। তবে এখন আবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
পূর্বের অন্ধকার দিনগুলো ভুলে সিলেটের পর্যটন খাত এখন নতুন করে উজ্জীবিত। সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নওশাদ আল মুক্তাদির জানান, পর্যটকদের আগমন বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ী, হোটেল মালিক, মাঝি-মাল্লা এবং ফটোগ্রাফারদের জন্য একটি নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, "করোনা পরবর্তী সময়ে সিলেটের পর্যটন খাতে এক ভয়াবহ ধস নেমেছিল। তবে এখন আমরা আশা করছি এই ছুটিতে প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ পর্যটক সিলেটে আসবেন।"
এছাড়া, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিলেট জেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ অত্যন্ত তৎপর রয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে প্রতিটি পর্যটন স্পটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সিলেটে চার দিনের ছুটিতে অন্তত ৫ লাখ পর্যটকের আগমনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে, সিলেটের পর্যটন খাত আবারও সোনালী সময়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যা স্থানীয় অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।