রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতির ফলে বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানির বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়ছে, এমন মন্তব্য করেছেন জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) ঢাকা প্রতিনিধি ইউজি আন্ডো। তিনি জানান, চলতি মাসে (নভেম্বর) প্রায় আটটি নতুন জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে তাদের সাথে যোগাযোগ করেছে, যা আগের মাসগুলোর তুলনায় একটি বড় পরিবর্তন।
আন্ডো আরও বলেন, "আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে এই ধরনের আলোচনা ছিল খুবই সীমিত, কিন্তু অক্টোবরে পরিস্থিতি কিছুটা পরিবর্তন হয়েছিল, আর নভেম্বরে তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।" তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনাকারী অনেক জাপানি কোম্পানি তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য জেট্রোতে আসছে, যা এই দেশের বিনিয়োগ পরিবেশের ইতিবাচক দিকে পরিবর্তন হওয়ার ইঙ্গিত।
এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানির ব্যবসায়িক মনোভাব বেশি ইতিবাচক বলে জানান আন্ডো। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের আকার এবং প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা সঠিক বিনিয়োগের জন্য বিশেষ সুযোগ তৈরি করছে।
জাপানি প্রতিনিধি আরও বলেন, "বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বিএসইজেড) এবং মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরসহ বিশ্বমানের অবকাঠামো উন্নয়ন বাংলাদেশকে লজিস্টিকস ও ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের জন্য একটি আকর্ষণীয় কেন্দ্রে পরিণত করবে।" তিনি আশাবাদী যে, বাংলাদেশে আরো ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে বাণিজ্য চুক্তি, যেমন অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ), ভূমিকা রাখবে।
তবে, আন্ডো জাপানি কোম্পানিগুলোর জন্য কিছু সমস্যা উল্লেখ করেন, বিশেষ করে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স পদ্ধতি। তিনি মনে করেন, এই ধরনের প্রতিবন্ধকতাগুলো সমাধান হলে বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ আরও উন্নত হতে পারে। এর পাশাপাশি, জাপানি কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (জেসিআইএডি) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) কাছে সংস্কারের জন্য একগুচ্ছ প্রস্তাব জমা দিয়েছে, যা দেশটির ব্যবসায়িক পরিবেশকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করবে।
এভাবে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের কারণে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের প্রবণতা বাড়ছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।