দুই বিয়ে করা যে গ্রামের রীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ৬ই নভেম্বর ২০২১ ০৭:৩৮ অপরাহ্ন
দুই বিয়ে করা যে গ্রামের রীতি

রাজস্থানের বাড়মের জেলার অন্তর্গত ছোট্ট একটি গ্রাম। ভারত-পাক সীমান্তের কাছে অবস্থিত গ্রামটির নাম দেরাসর। গ্রামের লোকসংখ্যা বড়জোর ৬০০ জন। কিন্তু এক অদ্ভুত রীতির জন্য রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে গ্রামটি। দেরাসরের প্রতিটি পুরুষের অন্তত দু’জন করে স্ত্রী!


অদ্ভুত এই রীতির পেছনে রয়েছে ততোধিক অদ্ভুত এক কারণ। গ্রামের বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন, প্রথম স্ত্রী গর্ভে নাকি কোনও স্বামীরই সন্তান হবে না। সন্তানের মুখ দেখতে গেলে নাকি দ্বিতীয় বিয়ে করতেই হবে। এই অদ্ভুত বিশ্বাস থেকেই দ্বিতীয় বিয়ে করেন গ্রামের পুরুষরা।


এমন রীতির সূত্রপাতও হয়েছিল অতীতের একটি অদ্ভুত ঘটনা থেকে। শোনা যায়, গ্রামের এক ব্যক্তির নাকি কিছুতেই সন্তান হচ্ছিল না। পরে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতেই সন্তানলাভ করেন।


এরপর থেকে গ্রামের কোন পুরুষ যখনই এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতেন, তাকে দ্বিতীয়বার বিয়ে দেওয়া হত। আর তাতেই নাকি সন্তানের দেখা মিলত। এই ভাবে পুরুষের বহুবিবাহ গ্রামের রীতিতে পরিণত হয়।


তবে এমন রীতির পিছনে এটিই একমাত্র কারণ নয়। আরও একটি কারণ রয়েছে। গ্রামে তীব্র পানির সঙ্কট। অন্তত পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে পরিবারের মহিলাদের পানি আনতে হয় এই গ্রামে। অন্তঃসত্ত্বা হলে কোনও মহিলার পক্ষেই হেঁটে পানি আনা সম্ভব নয়। সে কারণেও দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকেন পুরুষরা।


সে ক্ষেত্রে প্রথমজনকে সে ভাবে স্ত্রী-র কোনও অধিকারই দেওয়া হয় না। তারা বরং বাড়ির পরিচারিকার মতো জীবন কাটিয়ে থাকেন। সাধারণত প্রথম স্ত্রী সারা জীবনে সন্তানধারণের অধিকার পান না। স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনেরও অধিকার নেই তাদের।


কোনও পুরুষ যদি এই রীতির বিরোধিতা করেন তা হলে তার বিরুদ্ধে পুরো গ্রাম একজোট হয়। এমনকি নিজের পরিবারও তাকে পরিত্যাগ করে। গ্রাম থেকেই বিতাড়িত করা হয় তাকে।


দ্বিতীয় স্ত্রীও যদি সন্তানধারণ না করে থাকেন সে ক্ষেত্রে স্বামীকে আরও একটি বিয়ে করতে হয়। উপার্জনকারী স্বামীকে পরিবারের পুরো দায়িত্ব নিতে হয়।