হিলিতে খাদ্যপণ্য আমদানীর আড়ালে ভারতীয় কাপড় পাচার

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১১ই মে ২০২১ ০২:২০ অপরাহ্ন
হিলিতে খাদ্যপণ্য আমদানীর আড়ালে ভারতীয় কাপড় পাচার

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে অবৈধভাবে খাদ্য পণ্য আমদানীর আড়ালে বিপুল পরিমান ভারতীয় কাপড় ও ফেব্রিক্স পাচারকালে জব্দ করা হয়েছে। হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর- এ আলম টাস্ক ফোর্স এর যৌথ অভিযান চালিয়ে তাল মিছরির ট্রাক থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাড়ী,লুঙ্গি, ওড়না,থ্রি পিচ ও ফেব্রিক্স জব্দ করেন।


জানাগেছে, ঢাকার এস এন ট্রেডিং কোম্পানি আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এস এস ইন্টারন্যাশনাল এর নিকট এল সির মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৫৮১ টাকা পরিশোধ করে আমদানিকৃত তাল মিছরির ট্রাক গত শনিবার (৮মে) হিলি স্থলবন্দরের ভিতরে প্রবেশ করে। সি এন্ড এফ এজেন্ট হিসাবে নাম দেওয়া আছে হিলি স্থলবন্দরে অবস্থিত জেস ইন্টারন্যাশনাল।



পরর্বতীতে হিলি কাস্টমস এর যাবতীয় কার্যক্রম সম্পূর্ণ করে পরের দিন (৯মে) রবিবার বাংলাদেশী দুটি ট্রাক ( ঢাকা মেট্রো ট-১৫-৪৭৬১ এবং ঢাকা মেট্রো ট -১৫-৫৯৭০) করে আমদানিকৃত তাল মিছরি গুলো বন্দর ত্যাগ করলে ওই দিন বিকেলে বন্দর গেটের সামনে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর- এ আলম ট্রাঙ্ক ফোর্স এর যৌথ অভিযান চালিয়ে তাল মিছরির ট্রাক থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাড়ী,লুঙ্গি, ওড়না,থ্রি পিচ ও ফেব্রিক্স জব্দ করেন।


জব্দকৃত পণ্য গুলোর মোট ওজন প্রায় ১৭ মেঃটন। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি এবং বন্দরের  চেষ্টা করছে কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান, এমনটিই বলছেন বন্দরের ব্যবসায়ীরা।


আটককৃত ট্রাকে প্যাকেটের ভিতরে ভারতীয় শাড়ী-২২০৪ পিস, ওড়না-৪০৩৩ পিস, লুঙ্গী-১৮১২ পিস, পাঞ্জাবী-১২২ পিস, ব্রা-১৮২৪ পিস, থ্রি পিস-১৮০ পিস, জিলেট রেজার-১৮ পিস, তালমিছিরি-৪৭০ পিস, ঔষধ (ইনজেকশন)-৩৭০০ পিস, শার্ট-৫১ পিস ।


জব্দকৃত মালামাল গুলোর বাজার মূল্য ধরা হয়েছে আনুমানিক  ৮৬,৩০,৩০০/-(ছিয়াশি লক্ষ ত্রিশ হাজার তিনশত) টাকা এবং আটক দুটি ট্রাকের উদ্ধার মূল্য ধরা হয়েছে  অনুমানিক- ৪০,০০০০০/-(চল্লিশ লক্ষ) টাকা। দুইটি ট্রাকসহ জব্দকৃত  মালামাল গুলোর  সর্বমোট উদ্ধার মূল্য ধরা হয়েছে -১,২৬,৩০,৩০০/-(এক কোটি ছাব্বিশ লক্ষ ত্রিশ হাজার তিন শত ) টাকা। এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান পুলিশ।



এবিষয়ে জানতে হিলি কাস্টমস এর সহকারী কমিশনার (এসি) সাইদুল আলমের সাথে মুঠোফোনে (০১৯১১ .... ৭৩) এই নম্বরে বার বার  যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।



উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নুর-এ আলম বলেন, হাকিমপুর, হিলির গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সরকারি রাজস্ব ফাঁকি  দিয়ে তালমিশ্রির কাগজে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে ভারতীয় কাপড় বন্দরে এনেছে।


এমন সংবাদের ভিত্তিতে অদ্য  হাকিমপুর থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বন্দর গেটে অভিযান পরিচালনা করি। অভিযান চালিয়ে দুইটি দেশি ট্রাককে আটক করি। পরে ট্রাক দুটি তল্লাশি করে দেখা যায় উপরে কিছু  তালমিশ্রি, ভিতরে ফেব্রিক্স।



তিনি আরও জানান, ট্রাক দুইটি পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।  পণ্যগুলোর আসল মালিক কে এবং কারা এই কাজের সাথে জরিত আছে, তা তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।


পুলিশের হেফাজতে দেওয়া দুইটি ট্রাকের মালামাল গুলো হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ এর নেতৃত্বে গননা ও বাছাই প্রক্রিয়া শেষ করেন।



হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন বলেন,  কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অনিয়ম ভাবে পণ্য আমদানি করায় সরকারের রাজস্ব ফাঁকির পাশাপাশি বন্দরের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এ কাজের সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।